ভূমিকাঃ- টেকসই কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে পিকেএসএফ মূলত; মানুষের জীবনচক্রের শুরু থেকে শেষ পর্যায়ের সকল অবস্থাকে বিবেচনা করে কার্যক্রম গ্রহণ করে থাকে, যার সাথে আর্থ-সামাজিক ও পরিবেশগত উন্নয়ন সম্পৃক্ত রয়েছে। তাই আর্থিক উন্নয়নের সাথে পরিবেশগত উন্নয়নে গুরুত্বারোপ করার বিষয়টি ছাড়াও ব্যবসাগুচ্ছ-ভিত্তিক ক্ষুদ্র উদ্যোগে পরিবেশের স্থায়ী ইতিবাচক পরিবর্তনের মাধ্যমে ক্ষুদ্রউদ্যোগের টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে পিকেএসএফ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সহায়তায় বিশ্বব্যাংক অর্থায়িত – “Sustainable Enterprise Project (SEP)” বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করে। প্রকল্পটির মূল উদ্দেশ্য হল ব্যবসাগুচ্ছভিত্তিক ক্ষুদ্রউদ্যোগ গুলিতে পরিবেশসম্মত টেকসই চর্চা বৃদ্ধি করার জন্য উপযুক্ত প্রযুক্তির প্রচলন, বিপণন সামর্থ্য বৃদ্ধি ও ব্র্যান্ড তৈরীতে সহযোগিতার পাশাপাশি এতদ্বিষয়ক সক্ষমতা বৃদ্ধি করা।

 

প্রেক্ষাপটঃ
মুন্সীগঞ্জ জেলার লৌহজং, শ্রীনগর ও সিরাজদীখান উপজেলা বেশিরভাগ জনগোষ্ঠী গরু পালনের সাথে জড়িত এবং এই উপজেলাগুলিতে প্রায় ০.৫ মিলিয়ন গবাদি পশু রয়েছে। কিন্তু অবৈধ ওষুধ ও রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহারের খাবার খাইয়ে গরু মোটাতাজা করণের ফলে গরুর শরীরে নানা বিষাক্ত পদার্থ জমা এবং মাংসের সাথে মিশে যাচ্ছে। এসব, গরুর মাংস রীতিমতো জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর ও বিপদজনক। এসব, স্টেরয়েড ঔষুধ মানবদেহের কিডনি, ফুসফুস, লিভার, হৃদপিন্ড ইত্যাদি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। সঠিক ব্যবস্থাপনা না থাকায়, গোবর ও গো-মূত্রের ফলে মাটি, পানি এবং বায়ু দূষণের মাধ্যমে গোটা এলাকা দূষিত হয়ে পড়েছে। এ অঞ্চলের ভ‚গর্ভস্থ পানি মানুষের স্বাস্থ্য ও জীব বৈচিত্র্যের জন্য বিপজ্জনক। সঠিক খামার ব্যবস্থাপনা না থাকার কারনে খামারিরা নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। উক্ত এলাকায় বাছুর মৃত্যুর হার প্রায় ৫% যা দেশীয় মানের (৪%) চেয়ে অনেক বেশি এবং আন্তর্জাতিক মানের (প্রায় ২%) চেয়ে প্রায় ৬ গুন। খাদ্যের অত্যধিক ব্যয়, উন্নত জাতের ঘাসের অপ্রতুলতা, গো-চিকিৎসা প্রাপ্তির অভাব, অজ্ঞতা ও সচেতনতার অভাব, গোয়ালাদের দৌরাত্ব, গরুকে টেনে-হিচড়ে গাড়িতে উঠানো, পণ্যের বাজার সীমাবদ্ধতা ইত্যাদি কারণে খামারিরা গরু ও দুধের প্রাপ্য/ন্যায্য দাম হতে বঞ্চিত হচ্ছে। এসকল সমস্যা সমাধানকল্পে ও প্রকল্প এলাকার ভেটেরিনারি ও প্যারাভেটের সেবার মান উন্নত করনের মাধ্যমে বাছুর মৃত্যুর হার কমানো, আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে গো-খাদ্য ব্যয় কমানো, কমিউনিটি পর্যায়ে গো বর্জ্য সংরক্ষণাগার ও বায়োগ্যাস নির্মানের মাধ্যমে পরিবেশ সংরক্ষণ, আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে গো-খাদ্য ব্যয় কমানো, স্থানীয় ব্র্যান্ড উন্নয়ন কল্পে সার্টিফিকেশন এর মাধ্যমে খামারীদের উন্নত বাজারে প্রবেশে সহায়তা ইত্যাদি বাস্তবায়ন এর জন্য “সাসটেইনেবল এন্টারপ্রাইজ প্রজেক্ট (এসইপি)” এর আওতায় পিকেএসএফ-এর সহযোগী সংস্থা ‘’ শরীয়তপুর ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি ” গরু মোটাতাজাকরন অর্থনৈতিক কর্মকান্ড (সাব-সেক্টর) এর আওতায় “পদ্মা নদীর তীরবর্তী এলাকায় বিদ্যমান প্রচলিত গরু মোটাতাজাকরণ খামারকে নিরাপদ এবং প্রাকৃতিক খামারে রূপান্তরকরণ” উপ-প্রকল্প বাস্তবায়ন শুরু করে।